মেনু নির্বাচন করুন

প্রতিষ্ঠান পরিচিতি

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

কলেজিয়েট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, দিনাজপুর

বালুবাড়ী এলাকার জনতা অয়েল মিলের স্বাত্ত্বাধিকারী মরহুম মঞ্জুরুল হাসান কলেজিয়েট গার্লস স্কুলের স্বপ্নদ্রষ্টা। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, অর্গানাইজিং কমিটির প্রথম সম্পাদক। বালুবাড়ী এলাকায় কোন গার্লস স্কুল ছিল না। সরকারি গার্লস স্কুলে সীমিত আসন। মেয়েদের অন্য স্কুল সারদেশ্বরী গার্লস স্কুলের দূরত্ব অনেক হওয়ায় যাতায়াতের সমস্যা দেখে তিনি এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন এবং স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ কাজে তাকে সার্বক্ষণিক সহায়তা করেন ডা. হাফিজউদ্দিন আহমেদ এবং গোপাল চন্দ্র ভৌমিক। মঞ্জুরুল হাসান বয়োকনিষ্ঠ হওয়ায় ডা. হাফিজকে সামনে রেখে স্কুল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করেন। তৎকালীন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক জনাব আব্দুর রব চৌধুরীকে বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা অবহিত করালে তিনি তাতে সম্মতি প্রকাশ করে মহিলা কলেজের কিছু জায়গা ও ঘর দিয়ে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেন। তৎকালীন সুরেন্দ্রনাথ কলেজ বর্তমান সরকারি কলেজের জায়গায় স্থানান্তরিত হওয়ায় কলেজের বিরাট জায়গায় মহিলা কলেজ এবং সুরেন্দ্রনাথ কলেজের কমনরুমের অংশে কলেজিয়েট গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। মহিলা কলেজ সংলগ্ন হওয়ায় নাম হয় ‘কলেজিয়েট’।

 

১২ অক্টোবর, ১৯৬৬ ডা. হাফিজউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক আবেদনে ১৭ অক্টোবর, ১৯৬৬ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় মহিলা কলেজের হলে একটি সভা ডাকা হয়। আবেদনে বালুবাড়ী এলাকা এবং শহরের গণ্যমান্য ৬৭ জনের নাম লিপিবদ্ধ ছিল, যেখানে তাদের ৫০ জন স্বাক্ষর করেন। তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব আব্দুর রব চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় ১৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (নাম নেই), জনাব হাসান আলী এসপিকে, দিনাজপুর সরকারী কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ, মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ, জনাব হাফিজউদ্দিন চৌধুরী টিকে, ডা. আই এ খান, জনাব আজিজুল হক চৌধুরী, জনাব সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, জনাব শামসুদ্দিন আহমেদ জিপি, জনাব চিত্ত রঞ্জন সাহা, জনাব নুরুল আমিন, জনাব মহিউদ্দীন আহমেদ চৌধুরী, জনাব মো: অমিন, জনাব আছিরউদ্দীন আহমেদ, জনাব গোপাল চন্দ্র ভৌমিক এবং জনাব মঞ্জুরুল হাসান। সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, (১) স্কুলটি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা কমপক্ষে ২৫০/- টাকা দান করবেন তাঁদের নামে স্কুলে মার্বেল ফলক রাখা হবে, (২) ২৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি অর্গানাইজিং কমিটি গঠন করা হবে, (৩) জানুয়ারি ১৯৬৭ থেকে স্কুল চালু করার সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নরুপ ৫ সদস্য বিশিষ্ট ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়-

 

                                       (১) জেলা প্রশাসক, দিনাজপুর                              -     সভাপতি

                                       (২) জনাব হাসান আলী, এসপিকে                          -     সহ-সভাপতি

                                       (৩) জনাব হাফিজউদ্দিন চৌধুরী, টিকে                      -     সহ-সভাপতি

                                       (৪) জনাব মঞ্জুরুল হাসান                                   -     সম্পাদক

                                       (৫) জনাব আফতাবউদ্দীন আহমেদ                          -     যুগ্ন-সম্পাদক।

 

(৪) স্কুল স্থাপনে ব্যয় নির্বাহের জন্য ১০ হাজার টাকা অনুদান ১০ দিনের মধ্যে সংগ্রহের সিদ্ধান্ত সভায় নেয়া হয়। সভায় জনাব হাসান আলী এসপিকে, জনাব হাফিজউদ্দিন চৌধুরী টিকে. ডা. আই এ খান, জনাব ডা. হাফিজউদ্দিন আহমেদ, জনাব সাজারুদ্দিন আহমেদ, জনাব আজিজুল হক চৌধুরী, জনাব শামসুদ্দিন আহমেদ জিপি, জনাব চিত্ত রঞ্জন সাহা, জনাব আফতাব উদ্দিন আহমেদ (চেয়ারম্যান ইউসি-৩) জনাব গোপাল চন্দ্র ভৌমিক ২৫০/- টাকা করে এবং জনাব মঞ্জুরুল হাসান ৫০০/- টাকা অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

(৫) সভায় আরও সদস্য কো-অপ্টের ক্ষমতা দিয়ে নিম্নরুপ অর্গানাইজিং কমিটি গঠন করা হয়।

 

(১) জেলা প্রশাসক, দিনাজপুর                                                                                             সভাপতি

 

(২) জনাব হাসান আলী, এসপিকে                                                                                         সহ সভাপতি

 

(৩) জনাব হাফিজউদ্দিন চৌধুরী, টিকে                                                                                     সহ সভাপতি

 

(৪) জনাব মঞ্জুরুল হাসান                                                                                                 সম্পাদক

 

(৫) জনাব আফতাবউদ্দীন আহমেদ                                                                                        যুগ্ন সম্পাদক

 

(৬) অধ্যক্ষ, দিনাজপুর ডিগ্রী কলেজ                                                                                       সদস্য

 

(৭) জনাব ইউসুফ আলী, এমএনএ                                                                                        সদস্য

 

(৮) জনাব মইনউদ্দীন আহমেদ চৌধুরী, এমপিএ                                                                           সদস্য

 

(৯) জনাব মোস্তা হাসান ফরিদী                                                                                            সদস্য

 

(১০) অধ্যক্ষ, দিনাজপুর মহিলা কলেজ                                                                                     সদস্য

 

(১১) ডা. আই এ খান                                                                                                     সদস্য

 

(১২) জনাব সাজারুদ্দিন আহমেদ                                                                                           সদস্য

 

(১৩) জনাব মোকসেদ আলী, উকিল                                                                                        সদস্য

 

(১৪) জনাব শমসুদ্দিন আহমেদ, জিপি                                                                                       সদস্য

 

(১৫) জনাব গোপালচন্দ্র ভৌমিক                                                                                            সদস্য

 

(১৬) ডা. হাফিজউদ্দীন আহমেদ                                                                                             সদস্য

 

(১৭) প্রধান শিক্ষক, কলেজিয়েট গার্লস হাই স্কুল                                                                             সদস্য

 

(১৮) জনাব মোঃ আব্দুল মজিদ ইরাকী, চেয়ারম্যান ইউসি নং ১                                                               সদস্য

 

(১৯) জনাব আজিজুল হক চৌধুরী                                                                                           সদস্য

 

(২০) জনাব মাহফুজুল হক, উকিল                                                                                          সদস্য

 

 

এরপর ৩ ডিসেম্বর, ১৯৬৬ বেলা ১২ টায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক আব্দুর রব চৌধুরীর বাসভবনে বিদ্যালয়ের অর্গানাইজিং কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত সদস্যবৃন্দ হলেন- (১) জনাব আব্দুর রব চৌধুরী জেলা প্রশাসক, দিনাজপুর, (২) ডা. হাফিজউদ্দিন আহমেদ, (৩) জনাব হাফিজউদ্দীন চৌধুরী টিকে, (৪) জনাব গোপাল চন্দ্র ভৌমিক, (৫) জনাব সাজারুদ্দিন  আহমেদ, (৬) জনাব আজিজুল হক চৌধুরী, (৭) জনাব মাহফুজুল হক, (৮) জনাব মঞ্জুরুল হাসান, (৯) জনাব আফতাবউদ্দীন আহমেদ, (১০) জনাব মোশাররফ হোসেন।

 

সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব আব্দুর রব চৌধুরী সিএসপি, জেলা প্রশাসক, দিনাজপুর। সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, (১) স্কুলটিতে প্রথম ধাপে ৩য় থেকে ৮ম শ্রেণিতে ছাত্রী ভর্তি করানো হবে এবং অবিলম্বে ক্লাস শুরু করা হবে। ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে ছাত্রী ভর্তির ব্যবস্থা থাকবে। প্রতি ক্লাসে সর্বোচ্চ ৩০ জন ছাত্রী ভর্তি করানো হবে, (২) জনাব মীর মোশাররফ হোসেন, বিএবিটি কে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে জেলা প্রশাসক কর্তৃক নিয়োগদান সভায় অনুমোদন করা হয়, (৩) অভিভাবকদের সহায়তা করার লক্ষে এবং স্কুলের প্রচারের জন্য আসন্ন  এসএসসি পরীক্ষার ছাত্রীদের জন্য নূন্যতম ফি নিয়ে কোচিং ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে। এটির ব্যপক প্রচারের জন্য হ্যান্ডবিল এবং মাইকিং করার সিদ্ধান্ত সভায় নেয়া হয়, (৪) স্কুলের তহবিল সংগ্রহের জন্য দাতা এবং চাঁদাদানকারীদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা তহবিল সংগ্রহের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্দান্ত এ সভায় গ্রহন করা হয়।

 

চাঁদা সংগ্রহের জন্য এ্যাডভোকেট মাহফুজুল হক, জনাব আফতাবউদ্দিন আহমেদ এবং জনাব মঞ্জুরুল হাসানকে নিয়ে একটি উপ কমিটি গঠন করা হয়। মঞ্জুরুল হাসানের সাথে আলাপচারিতায় জানা যায় মাহফুজুল হক এবং আফতাবউদ্দিন আহমেদ ৫/৭ দিন এ কাজে বের হওয়ার পর পিছিয়ে আসেন। পরবর্তীতে তাঁকে একই তহবিল সংগ্রহের কঠিন কাজটি করতে হয়। স্কুল শুরুর দিকে মঞ্জুরুল হাসান সম্পাদক, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, পিয়ন-সবার কাজই করেছেন। জনাব গোপাল চন্দ্র ভৌমিক স্কুল প্রতিষ্ঠার আগেই একটি ড্রাম কেটে তাতে নিজে স্কুলের নাম লেখে টাঙ্গিয়ে দিয়েছেন। স্কুল প্রতিষ্ঠায় সর্বক্ষণিক সহায়তা করেছেন।

 

নবনিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মীর মোশাররফ হোসেনকে নিয়ে কিছু জটিলতা এবং সুরেন্দ্রনাথ কলেজ স্থানান্তরে বিলম্ব হওয়ায় কলেজিয়েট গার্লস স্কুল জানুয়ারির পরিবর্তে ১৯৬৭ সালের ১০ মার্চ দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক, দিনাজপুর মহিলা কলেজ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিবর্গের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন এমএলএ হাসান আলী এসপিকে ওই দিন স্কুলের শুভ উদ্বোধন করেন। ১৯৬৮ সালে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে।

 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিদ্যালয়ের যাবতীয় নথিপত্র ধ্বংস হয়ে য়ায়। দেশ স্বাধীনের পর বিদ্যালয় নতুন করে যাত্রা শুরু করে। ১৯৭৩ সালে বিজ্ঞান শাখা চালু করা হয়। অনেক চড়াই উৎরাই অতিক্রম করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ছা্ত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৯ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে শাখা খোলার প্রয়োজন দেখা দেয়।

 

ক্রমান্বয়ে ১৯৯৪ সালে এসে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে ৩টি, ৮ম শ্রেণিতে ২টি, ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা খোলা হয়। সময়ের প্রয়োজনে একটি মেয়েকে মাধ্যমিক স্তর থেকেই পেশাভিত্তিক দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০০০ সালে এসএসসি ভোকেশনাল কোর্স স্কুলে সংযোজন করা হয়। বর্তমানে ৩টি ট্রেড যথাক্রমে ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং, ফুড প্রসেসিং এন্ড প্রিজারভেশন ও জেনারেল ইলেকট্রিকাল ওয়ার্কস- এ পাঠদান কার্যক্রম চলছে।

 

১৯৯৭ শিক্ষাবর্ষে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণি (মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা) সংযোজন করার লক্ষ্যে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে একাডেমিক স্বীকৃতি গ্রহণ করা হয়। ফলে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের মর্যদা লাভ করে।

 

বর্তমানে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্য়ন্ত প্রায় ২৫০০ (দুই হাজার পাঁচ শত) জন ছাত্রী শিক্ষা গ্রহন করছে। প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এই প্রতিষ্ঠানের ফলাফল উল্লেখ করার মতো। প্রতিষ্ঠানের জমির পরিমাণ ০১.৩০ একর। একটি চার তলা, একটি তিন তলা ও তিনটি দ্বিতলা ভবনে ৫২টি কক্ষ রয়েছে, যার মধ্যে ৫১টি শ্রেণি কক্ষ এবং ১টি হল রুম। মাননীয় হুইপ জনাব ইকবালুর রহিম এমপি মহোদয়ের উদ্যোগে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে প্রায় ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় নির্মিত চারতলা ভিতবিশিষ্ট দ্বিতল ‘নাজমা রহিম ভবন’ গত ১২ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানে মাননীয় হুইপ শুভ উদ্বোধন করেন। মাননীয় হুইপ জনাব ইকবালুর রহিমের সার্বিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানের সুদৃশ্য মূল গেট নির্মাণাধীন। প্রতিষ্ঠানটিতে উন্নত বিজ্ঞানাগার, সমৃদ্ধ একটি লাইব্রেরী, একটি ‘বেসিক আইসিটি স্কিল আপ টু উপজেলা লেভেল’ শীর্ষক প্রকল্পের অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, ভোকেশনাল শাখার তিনটি ল্যাবসহ মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ রুমের ব্যবস্থা্ রয়েছে। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে শিক্ষণীয় বিভিন্ন বিষয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া প্রতি শনিবার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে আসে, সেখান থেকে স্বল্প খরচে শিক্ষার্থীরা পছন্দমত বই নিয়ে পড়তে পারে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্কুল ও কলেজ পর্যাযের বই পড়া কর্মসূচী গত ২০১৬ খ্রিঃ থেকে প্রতিষ্ঠানে চালু করা হয়েছে। আমরা মনে করি আলোকিত মানুষ সৃষ্টিতে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্ক, সংগীত, নৃত্যও সহপাঠ্যক্রমিক অন্যান্য বিষয়ে পতিষ্ঠানের ছত্রীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগহণ করে নিয়মিত সাফল্য অর্জন করে আসছে। দিনাজপুরে অনুষ্ঠিত ৪৪তম জাতীয় (স্কুল ও মাদ্রাসা) ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০১৫-র উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে (১৬ ও ২০ সেপ্টেম্বর) কলেজিয়েট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ডিসপ্লে ‘এগিয়েযাও বাংলাদেশ’ শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়সহ উপস্থিত দেশের শিক্ষা পরিবার ও অসংখ্য মানুষের বিপুল প্রশংসা অর্জন করে। উল্লেখ্য যে, প্রতিষ্ঠানের ১৮৫ জন শিক্ষার্থীর পরিবেশনায় বর্ণাঢ্য একমাত্র এই ডিসপ্লেটি উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষর্থীরা উপজেলা পর্যায়ে ৮টি ও জেলা পর্যায়ে ৬টি বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে। জেলা প্রশাসন আয়োজিত ২০১৭ সালে মহান স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়জে এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের দল প্রথম স্থান অধিকার করে। জেলা প্রশাসন আয়োজিত শুদ্ধভাবে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন প্রতিযোগিতায় ২০১৮ সালে শ্রেষ্ঠ এবং ২০১৯ সালে তৃতীয় স্থান লাভ করে। জাতীয় শিশু প্রতিযোগিতা ২০১৯ ও ২০২০ –এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জেলা পর্যায়ে ১০টি বিষয়ে শ্রেষ্ঠ এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ৫টি পুরস্কার লাভ করে।

 

২০০৯ সালে মাননীয় হুইপ জনাব ইকবালুর রহিম এমপি এই প্রতিষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিষ্ঠানে উন্নয়নের নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। পরীক্ষার ফলাফল, ছত্রীসংখ্যা, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সার্বিকভাবে এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় কলেজিয়েট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের কারণে মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি থাকতে না পারার কারণে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদ ছেড়ে দেন। তবে আমরা দৃঢ়ভাবে মনে করি –তিনিই এই প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত পথ প্রদর্শক, আমাদের অনুপ্রেরণা।

 

একটি সুযোগ্য গভর্নিং বডি দ্বারা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। সভাপতি জনাব মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম ১১ নভেম্বর ২০১৮ আকস্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করার পর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর মোঃ রুহুল আমিন গভর্নিং বডির সভাপতি নির্বাচিত হন।

 

সুযোগ্য গভর্নিং বডির দক্ষ পরিচালনা এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি পরীক্ষার ফলাফল, ছাত্রী সংখ্যা, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে ছাত্রীদের শিক্ষাদান, শিক্ষার গুণগত মানউন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে। মনোরম পরিবেশে এবং দিনাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কলেজিয়েট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ দিনাজপুর তথা দেশের নারী শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।